খুলনা, বাংলাদেশ | ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ৪ দিনের সফরে লন্ডনে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সরকারের অনাগ্রহে ক্ষুব্ধ সাতক্ষীরাবাসী

নিজস্ব প্রতি‌বেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রকল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালিন সরকার। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে সোমবার (৯ জুন) দুপুরে আয়োজিত মিলন মেলা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদিত প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, পুরোনো অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ইপিজেডগুলোর অনেকই খালি পড়ে আছে। সেগুলোর সক্ষমতা ব্যবহার না করে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করলে জাতীয় সম্পদের সঠিক ব্যবহার হবে না।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে সাতক্ষীরার অর্থনৈতিক অঞ্চল ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে এক দশকের বেশি সময়ে কয়েকটি বেসরকারি অঞ্চল ছাড়া সফল কোন অর্থলনতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে, সাতক্ষীরায় নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অনাগ্রহের বিষয়ে চরম হতাশা, ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাড, আজাদ হোসেন বেলাল, নাগরিক নেতা আলী নুর খান বাবুল সহ অনেকে।

নাগরিক নেতা আলী নুর খান বাবুল বলেন, এই জেলার কৃষি, মৎস্য, ডেইরি শিল্প, টালী ইত্যাদি দেশী বিদেশীদের নজর কেড়েছে। বিগত সরকারের সময়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণা হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলার অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্যে গতি বৃদ্ধিসহ সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণে আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু এই প্রকল্প থেকে সরকার মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় আমরা দারুনভাবে ক্ষুব্ধ ও আশাহত। তিনি এই সিদ্ধান্ত পুন বিবেচনার জোর দাবি জানান।

অ্যাড আজাদ হোসেন বেলাল বলেন, সাতক্ষীরা বাণিজ্যের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় একটি জেলা। আমরা জেলাবাসীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করে সাতক্ষীরায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিষয়ে সরকারকে চাপ সৃষ্টি করে আসছি। এক পর্যায়ে বিগত সরকার সাতক্ষীরায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রকল্পটি অনুমোদন করে। কিন্তু এখন শুনছি প্রকল্পটি থেকে সরকার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এটা আমাদের জন্য চরম হতাশাজনক। আমরা সরকারকে সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনার আহবান জানাচ্ছি এবং একই সাথে দ্রুততম সময়ে প্রকল্পটির কাজ শুরুর দাবি জানাচ্ছি।

ঢাকাস্থ সাতক্ষীরা সমিতির সহ সভাপতি ইকবাল মাসুদ বলেন, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অপার লীলাভূমি সাতক্ষীরা জেলা। জেলাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সাতক্ষীরা। দেশের অষ্টম বৃহত্তম জেলা সাতক্ষীরার সাতটি উপজলার জনসংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। এই জেলার অপার অর্থনৈতিক সম্ভবনা আছে, যা উন্নয়নের মাধ্যেমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলা চিংড়ি চাষে বিখ্যাত। দেশের রপ্তানিকৃত চিংড়ির প্রায় ৭০ ভাগ এই জেলায় উৎপাদন হয়ে থাকে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন ‘সুন্দরবন’ এর একটি বৃহৎ অংশ এই জেলার মধ্যে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর ভোমরা স্থল বন্দরের অবস্থানও সাতক্ষীরায়। অর্থনৈতিকভাবে এই জেলা মৎস চাষ, কাঁকড়া, মধু, আম, ডেইরি শিল্প, মৃতশিল্প, শাকসবজি ইত্যাদির জন্য সুপরিচিত। এসব কারণে এ্ই জেলায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্টা খুবই যুক্তিযুক্ত। তিনি এই প্রকল্পের বিষয়ে পুনবিবেচনার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!